জাবির মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে জাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩১ অপরাহ্ন | শিক্ষা

মাহমুদুল হাসান (জাবি প্রতিনিধি):
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত সিয়াম আত্মহত্যা করেছেন।
আরাফাত সিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার চিলাহাটি।
আজ সন্ধ্যায় মীর মশাররফ হোসেন হলের তার নিজ কক্ষ ১১৫/বি থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেন তার সহপাঠীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল থেকে তার রুম ভেতর থেকে বন্ধ ছিলো। মাগরিবের পরও রুম বন্ধ দেখে একজন রুমে ধাক্কা দেন, জানালায় সাঁটানো কাগজ সরিয়ে উঁকি দিলে তার ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়। পরবর্তীতে প্রায় ২০ মিনিটের চেষ্টায় রুমের দরজা ভেঙে তাকে বের করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে সেন্টারে নিয়ে গেলে ৭:১২ মিনিটে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে ক্লিনিক্যালি মৃত ঘোষণা করেন।
আরাফাত সিয়াম আত্মহত্যা করার আগে গতকাল (সোমবার) রাত ৪টা ২৫ মিনিটে তার ব্যাক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে লেখেন, "আমার সকল জিজ্ঞাসা আজ পথ পেয়েছে। সবকিছুর উত্তর পেয়েছি। এটা স্বর্গীয় মূহুর্ত, যা আমি আগে কখনো পরখ করিনি। কোন শব্দ দিয়ে তা বর্ণনা করা যাবে না।... সমগ্র জীবনে একটা প্রশ্নই আমাকে তাড়া করতো। জীবনের মানে কী? আমি আমার সমগ্র জীবন জুড়ে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি। আমি প্রায় সম্ভাব্য সব বই পড়েছি।....কিন্তু একটা বিষয় জানা জরুরি যে কেউ তোমাকে এটা শেখাতে পারবে না।....জীবনকে বুঝতে হলে তোমাকে আগে মৃত্যুকে বুঝতে হবে। এটা সবকিছুর পরিসমাপ্তি।...যখনই তুমি মৃত্যুকে বুঝতে পারবে তখই তুমি জীবনের উদ্দেশ্য জানতে পারবে। "
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ বীরেন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, "সিয়ামকে সন্ধ্যা ৭:১০ মিনিটের দিকে তার সহপাঠীরা মেডিকেলে নিয়ে আসে। এসময় তার গলায় ফাঁস লাগানো ছিল। আমরা তার পাল চেক করে করে পালস পাই নি এবং যাবতীয় পরীক্ষা করে তাকে ক্লিনিক্যালি মৃত ঘোষনা করি।"
এসময় আরাফত সিয়ামের কক্ষ থেকে সদ গুরুর ‘‘ডেথ’’ বইটি পাওয়া যায়। হলের অনেকের ভাষ্যমতে তিনি বেশ কিছুদিন যাবৎ মেডিটেশন করছিলেন। এছাড়া তিনি কিছুদিন যাবৎ আধ্যাত্মিক ধরনের কথা বার্তা বলতেন সবার সাথে। জানা যায় তিনি সেশন ড্রপ আউট করেন এবং ৪৭ ব্যাচের সাথে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, "আমরা আরাফাত সিয়ামের আত্মহত্যার ঘটনাটি জেনেছি। তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
তার মৃতদেহ এখন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে সেন্টারে রাখা হয়েছে।